উখিয়ায় করোনা বিস্তারে ঝুঁকি বাড়ছে

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •

করোনা ভাইরাস মহামারিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এতে দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

বিশেষ করে নিম্নমধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র মানুষেরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর সাত মাস পার হতে চলেছে। পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না।

কিন্তু সংক্রমণ রোধে গত মার্চে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির পরই মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সংক্রমণঝুঁকি মাথায় নিয়েই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে সব কিছু। করোনা সংক্রমণের ফলে দেশের সকল কেজি স্কুলের শিক্ষকরা এখন বেকার।

উখিয়া কেজি স্কুলের শিক্ষক ফরিদুল আলম বলেন, করোনার কারণে কেজি স্কুল বন্ধ। সরকারি প্রাইমারি স্কুল বন্ধ হলেও এরা বেতন পায়। আর কেজি স্কুল ছাত্রদের বেতনের উপর চলে। স্কুল যেহেতু বন্ধ সেহেতু আমাদের আর খবর নেওয়ারও কেউ নেই। আত্নীয়-স্বজন থেকে হাত পেতে আর বন্ধু-বান্ধব থেকে ধার-দেনা করে আর কতদিনই বা চলা যায়। আমেনা বেগম ৯ বছর ধরে কেজি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। তিনি বলেন, করোনার আগে তিনটি টিউশনি করে ৯ হাজার টাকা এবং কেজি স্কুল থেকে ৩ হাজার টাকা সব মিলিয়ে ১২ হাজার টাকা পেতাম। অসুস্থ বাবা আর তিন ভাই বোন নিয়ে থাকি। করোনা বাড়তে থাকলে গত এপ্রিল মাসে প্রাইভেট পড়ানো থেকে আমাকে সবাই বাদ দেই।

অভাবের সংসার এখন বড় ভায়ের ইনকামের উপরই নির্ভর করতে হয়। বিশিষ্ট কবি ও তরুণ লেখক আফসার উদ্দিন বলেন, দেশের অন্য জেলার চেয়ে আমাদের কক্সবাজার অনেক ভালো আছে। এরপরও সম্প্রতি ৪০-৫০ বছরের কোটায় থাকা উখিয়ার দু,একজন করোনায় আক্রান্ত ও লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়ায় বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করেছেন। আসছে শীতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়তে পারে এমন শঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

উখিয়ার বেশ কজন অল্প সময়ের ব্যবধানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং কেউ কেউ স্ট্রোক করে মারা যাওয়ায় অনেকেই মনে করছেন ৪০-৫০ বছরের কোটায় থাকা লোকজন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটাচ্ছেন। যাদের অনেকেই জানেন না, তারা করোনায় আক্রান্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করেছেন। এখন করোনায় আক্রান্ত হলেও আগের মতো প্রশাসনের সেই তৎপরতা নেই।

তাই করোনায় আক্রান্ত হলেও নিজের সু-রক্ষা নিজের উপরেই। করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেও অনেকেই তা প্রকাশ করতে চান না। কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ক্রমবর্ধমান হারে বিস্তার ছড়িয়ে দিচ্ছেন। অনেকেই জানেন না যে, তারা করোনায় আক্রান্ত। এটি করোনা বিস্তারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।